সরকারি স্কুলের ক্লাস রুম নির্মান না করেই বাম মার্গীয় এক ইঞ্জিনিয়ার পুরো টাকাই গায়েব করে নিয়ে দিব্যি প্রকাশ্যে ঘুরাফেরা করছে। উল্টো কাজ সম্পন্ন করার জন্য কিংবা টাকা ফেরত চেয়ে বিডিও চিঠি দিলেও এই বাম মার্গীয় ইঞ্জিনিয়ার পাত্তাই দিচ্ছেন না। ঘটনা কৈলাসহরের ইরানী গ্রাম পঞ্চায়েততের জুমেরচেগ নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়ে। কৈলাসহরের গৌরনগর ব্লকের অধীনে অবস্থিত ইরানী গ্রাম পঞ্চায়েত। ইরানী গ্রাম পঞ্চায়েতের ছয় নং ওয়ার্ড এলাকায় অবস্থিত জুমেরচেগ নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়। দীর্ঘদিন ধরেই জুমেরচেগ নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়ে ক্লাস রুমের অভাবে ছাত্র ছাত্রীদের পড়াশোনায় ব্যহত হচ্ছিলো। ক্লাস রুম নির্মানের জন্য ছাত্র ছাত্রীদের অভিভাবকদের পক্ষ থেকে এবং স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে কয়েকবার প্রশাসনের কাছে জানানোর পর অবশেষে গত ২০১২সালে ঊনকোটি জেলার জেলাশাসক BADP ফান্ড থেকে প্রায় ছয় লক্ষ টাকা বরাদ্দ করে RD-এর নিকট পাঠায়। RD এই টাকা পেয়ে যথারীতি গৌরনগর য়ব্লকের বিডিও-কে জুমেরচেগ নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়ের ক্লাস রুম নির্মানের জন্য দায়িত্ব দেয়। গৌরনগর ব্লকের বিডিও ব্লকের ইঞ্জিনিয়ার সুদীপ রায়কে ক্লাস রুম নির্মানের জন্য দায়িত্ব দেয় অর্থাৎ বিডিও এই কাজের ইমপ্লিমেন্টিং অফিসার হিসেবে ইঞ্জিনিয়ার সুদীপ রায়যে নিয়োগ দেয়। কাজের দায়িত্ব পেয়ে ইঞ্জিনিয়ার সুদীপ রায় ২০১২সালেই ব্লকের স্টোর থেকে সিমেন্ট, রড এবং ইট নিয়ে কাজ শুরু করে। কাজ শুরুর কিছু দিন পর হঠাৎ করে কাজ বন্ধ করে দেয়। আজ অব্দি প্রায় দশ বছর অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও জুমেরচেগ নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়ের ক্লাস রুম নির্মান হয়নি। যাও হয়েছে ঘরের মধ্যে জংগল এবং বড় বড় গাছ উঠে রয়েছে। তাছাড়া ইট দিয়ে যে পরিমাণ ওয়াল তৈরী হয়েছে সেই ওয়াল একেবারেই নষ্ট হয়ে গেছে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, ইঞ্জিনিয়ার সুদীপ রায় পঞ্চাশ হাজার টাকারও কাজ না করিয়ে পুরো টাকাই গায়েব করে নিয়েছেন। শুধু তাই নয়, ইঞ্জিনিয়ার সুদীপ রায় কাজ শুরু সময় স্থানীয় মানুষদের দিয়ে কাজ করিয়ে ছিলেন এবং ইট, রড, বালু এবং সিমেন্ট পাহাড়া দেওয়ার জন্য স্থানীয় মানুষদের নিয়োগ করেছিলেন। কিন্তু ইঞ্জিনিয়ার সুদীপ রায় এই স্থানীয় মানুষদেরও টাকা দেয় নি বলে বঞ্চিত স্থানীয় মানুষরা জানান।

জুমেরচেগ নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়ে ক্লাস রুম নির্মান কেন হচ্ছে এই দাবীতে স্থানীয় মানুষ কিছুদিন পূর্বে কৈলাসহর মহকুমার RD-এর SDO শতনু ভট্টাচার্যের নিকট ডেপুটেশন প্রদান করেছিলো।  ডেপুটেশন প্রদানের পর শতনু ভট্টাচার্য গৌরনগর ব্লকের বিডিও রামেশ্বর চক্রবর্তীর নিকট লিখিতভাবে এই ঘটনা জানতে চান। গৌরনগর ব্লকের বিডিও রামেশ্বর চক্রবর্তী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে ঊনকোটি জেলার জেলাশাসকের নিকট  লিখিতভাবে পুরো ঘটনা জানান। কারণ, ২০১২সালে জুমেরচেগ নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়ের ক্লাস রুম নির্মান চলাকালীন ইঞ্জিনিয়ার সুদীপ রায় গৌরনগর ব্লক থেকে বদলী হয়ে উত্তর জেলার কাঞ্চনপুর চলে যান। তাই বর্তমানে গৌরনগর ব্লকের বিডিও রামেশ্বর চক্রবর্তী সরাসরি ইঞ্জিনিয়ার সুদীপ রায়ের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের পদক্ষেপ নিতে পারবেন না। তাই গৌরনগর ব্লকের বিডিও ঊনকোটি জেলার জেলাশাসকের নিকট লিখিতভাবে জানান। প্রশাসনিক কোনো পদক্ষেপ নিতে হলে জেলাশাসকই নিতে পারবেন। গ্রামবাসীরা চাইছেন খুব শীঘ্রই ইঞ্জিনিয়ার সুদীপ রায়ের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে নতুন করে ক্লাস রুম নির্মানের কাজ শুরু হউক। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায় যে, বাম মার্গীয় ইঞ্জিনিয়ার সুদীপ রায় জেলাশাসক কিংবা বিডিও-কে পাত্তাই দিচ্ছেন না। বাম আমলে ইঞ্জিনিয়ার সুদীপ রায় গৌরনগর ব্লকে থাকাকালীন প্রচুর নির্মান কাজে সরাসরি কেলেংকারীতে জড়িত ছিলেন।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Previous post জটিল রোগে আক্রান্ত শিশু, সাহায্য চাইলেন অসহায় মা
Next post অধীর রঞ্জন চৌধুরী সাক্ষাত্কারে ইডিকে “ইডিয়ট” বলেছেন, তা নিয়ে বিতর্কের মুখে অধীর
%d bloggers like this: