রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলের পর আজ ৫০ তম দিন। রাজ্যের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে প্রায় একাধিক পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে। বিরোধী ঐক্য নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্য বিধানসভার ফলাফলের পর একাধিক প্রশ্ন দেখা গেছে। নির্বাচন ফলাফলের আগে যেই রাজনৈতিক পরিমণ্ডল ছিল তা যে এখন সম্পুর্ন রুপে পাল্টে গেছে তাও আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু ২০২৩’র নির্বাচনে যে একটি দল সবার আলোচনার কেন্দ্র বিন্দু ছিল সেই দলটি হল তিপ্রা মথা। প্রায় বলা চলে বাড়ির বসার ঘর থেকে চায়ের দোকান প্রায় সর্বত্রই ছিল মথার গতি প্রকৃতি নিয়ে আলোচনা। মথা কোন দিকে যাবে? মথা কি বিরোধী ঐক্যে সামিল হবে কিনা? নাকি মথা বি জে পি’র সাথেই জোটে যাবে? ইত্যাদি একাধিক প্রশ্ন প্রায় প্রত্যেকেই একে অপরের কাছে কম বেশ করেছেন।
একদিকে প্রদ্যুৎ কিশোর দেবর্মনের গ্রেটার তিপ্রা ল্যান্ডের দাবী অন্যদিকে বাম-কংগ্রেসের জোট! সবমিলিয়ে ছিল জম জমাট নির্বাচন। ফলাফলেও জমজমাট ছবি লক্ষ্য করা গেছে।
কিন্তু এবার প্রশ্ন হল হঠাৎ মাঠ উধাও তিপ্রা মথা সুপ্রিমো! দেখা নেই তাঁর? অমিত শাহের সঙ্গে রাজ্য অতিথি শালায় দীর্ঘ কয়েক ঘণ্টা বৈঠকের পর প্রদ্যুৎ নিজেই জানিয়েছিলেন যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক গ্রেটার তিপ্রা ল্যান্ড ইস্যুতে একজন মধ্যস্ততাকারী নিয়োগ করবে! এবং সেটা খুব শীঘ্রই হবে কিন্তু দীর্ঘ সময় গড়িয়ে গেলেও এখনও নিয়োগ হয়নি সেই মধ্যস্ততাকারী! মাঠে নেই প্রদ্যুৎও। চরম হতাশায় ভুগছে রাজ্যের জনজাতি মানুসেরা! যেই বুবাগ্রা আশা দেখিয়েছিলেন সেই বুবাগ্রা কিংবা রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলের প্রতিশ্রুতি তথা এত বড়বড় ভাষণের নিট ফল কি তাহলে শুন্য? এমন অনেক প্রশ্নই এখন চারিদিকে! যদিও মথা সুত্রে খবর শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলের সুপ্রিমো বিদেশে রয়েছেন! কিন্তু প্রশ্ন হল প্রধান বিরোধী দলনেতা কোথায়? উনার ভুমিকা কি? কোথায় আছেন উনি? শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে নাকি জনতার পাশে?
সাধারণত বিরোধী দলের কাজ হচ্ছে সরকারের বিভিন্ন কাজ নিয়ে আলোচনা এবং সমালোচনা করা, কোথাও ভুল হলে সেটা ধরিয়ে দেওয়া! কিন্তু সেটা রাজ্যে হচ্ছে কই? যাও বামেরা সাংবাদিক সম্মেলন করল তাও নির্বাচনের ফলাফলের ৫০ দিন পর ফলাফল নিয়ে আলোচনা! যাই হোক বামেরা তো আর এখন প্রধান বিরোধী দল নয় কিন্তু যারা প্রধান বিরোধী দল তারা কোথায়? যেহেতু বিরোধী দল একেবারেই গায়েব তাহলে বলা যেতেই পারে রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহার নেতৃত্বে যে সরকার বর্তমানে চলছে তা খুব ভালো চলছে? তাই বিরোধী দলনেতা সহ সমস্ত বিরোধী দলগুলো কোন প্রশ্নই তুলতে পারছেন না!
যাই হোক সব মিলিয়ে বলা যায় দ্বিতীয় বারের জন্য ক্ষমতায় আসার ৫০ দিন পরেও বি জে পি সরকারের কাজে রাজ্যের বিরোধী দল গুলোর এতটাই সন্তুষ্টি যে তাদের সাংবাদিক সম্মেলনে কোন প্রসঙ্গই উঠে আসল না! শুধুই ফলাফলের সমীক্ষা?
এদিকে প্রধান বিরোধী দলের মুখ্য ব্যাক্তি এখন কোথায় আছেন তা নিয়েও উঠছে একাধিক প্রশ্ন! অনেকেই বলছেন তিনি হঠাৎ হঠাৎ হারিয়ে যান! অনেকে বলেন নেতা নাকি অমন ই হয় ভোটের আগে এসে দুচারটি ভাষণ তারপর শেষ!
যাইহোক মানুষ কিন্তু এখনও উদগ্রীব হয়ে বসে আছে মধ্যস্ততাকারী তথা ইন্টারলোকেটার কতদুর এল তা জানতে! হয়তো সেই ভয়েই বিরোধী দলনেতা সহ সমস্ত মথা নেতৃত্ব সাংবাদিকদের মুখোমুখি হচ্ছে না! সব শেষে বলা যায় এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর একমাত্র মথা নিজেই দিতে পারবে!