মধ্যরাতে প্রয়াগরাজে ভয়াবহ কাণ্ড। গঙ্গা, যমুনা ও সরস্বতী ত্রিবেণীর মহাসঙ্গমে মৌনী অমাবস্যায় ‘শাহি’ স্নানে গিয়ে প্রাণ হারালেন বহু পুণ্যার্থী। গুরুতরভাবে আহতও হলেন অনেকে। কিন্তু কেন? রাতবিরেতে এমন কী ঘটল প্রয়াগরাজে? প্রশাসন জানাচ্ছে, উপচে পড়া ভিড়, আর তার জেরে পদপিষ্ট বহু।
উত্তরপ্রদেশের প্রশাসন সূত্রে খবর, ঘটনায় কমপক্ষে মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের। আহত হয়েছে জনা বিশেক পুণ্য়ার্থী। কিন্তু সরকারি তথ্যকে মানতে নারাজ স্থানীয়রা। রাতবিরেতে সেই ভয়াবহ কাণ্ড নিজের চোখে দেখে প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, দশের বেশি পুণ্যার্থীর মৃত্যু হয়েছে।
ইতিমধ্যেই এই অচলাবস্থা ঘিরে উত্তরপ্রদেশ সরকারকে কাঠগড়ায় টেনে এনেছে বিরোধী শিবির। ভিআইপি সংস্কৃতিকেই এই ঘটনার নেপথ্যে দায়ী করেছেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী।
তাঁর কথায়, ‘ভিআইপি বা বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বদের বাড়তি গুরুত্ব দিতে গিয়ে সাধারণ মানুষকে বিপদে ঠেলে দিয়েছে প্রশাসন। উত্তরপ্রদেশ সরকারের খেয়াল রাখা উচিত যেন এমন ঘটনার আর পুনরাবৃত্তি না হয়।‘
পাল্টা কিন্তু চুপ করে থাকেনি মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথও। তাঁর দাবি, ‘সেই মুহূর্তে প্রায় ৮ থেকে ১০ কোটি পুণ্যার্থী প্রয়াগরাজে উপস্থিত ছিলেন। এই এত পরিমাণ পুণ্যার্থীদের ভিড় সামলাতে রীতিমতো কালঘাম ছুটে যাচ্ছে প্রশাসনের। অবৈধ ভাবে প্রশাসনের দেওয়া ব্যারিকেড পেরতে গিয়ে কিছু পুণ্যার্থী আহত হয়েছেন। ইতিমধ্যেই তাদের প্রত্যেককে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে প্রশাসন তরফে।’
ঠিক কী ঘটেছিল এদিন?
প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, পরিস্থিতি রাত ১২টা পর্যন্ত একদমই ঠিক ছিল। কিন্তু তার পর ভিড়ের ছবিটা একেবারে বদলে যায়। মৌনী অমাবস্যার রাতে পুণ্যস্নান করতে মহাসঙ্গমের তীরে জড়ো হন কোটি কোটি পুণ্যার্থী।
প্রশাসন চেয়েছিল, পুণ্যার্থীরা আসুক, স্নান করুক, তারপর ফিরে যাক। কিন্তু এমনটা মোটেই হচ্ছিল না। বরং, স্নানের পরেই তীরেই ভিড় জমাচ্ছিলেন অনেকে। সেই বিষয়টিকে মাথায় রেখে ভিড় সামলাতে ব্যারিকেড বসানো হয়। তারপরেই ঘটে বিপত্তি। ব্যারিকেড টপকে, ভেঙে সঙ্গমের দিকে এগোনোর চেষ্টা করেন পুণ্যার্থীরা। ঠেলাঠেলি, ধাক্কাধাক্কি আর তারপর পদপিষ্টের মতো ঘটনা।