মোবাইল ও ইন্টারনেট যুগে প্রতিদিন প্রতারিত হচ্ছে হাজার হাজার মানুষ।রাজ্যসহ গোটা দেশে প্রতারকের বিভিন্ন চক্র ব্যাঙের ছাতার মত গজিয়ে উঠেছে।বিভিন্নভাবে যেমন ফেইসবুক,ইনস্টাগ্রাম টুইটার, ইউটিউবের মাধ্যমে মানুষকে বোকা বানিয়ে বিভিন্ন প্রতারকচক্র প্রতারণার ফাঁদে ফেলে বহু পরিবারকে সর্বস্বান্ত করে চলছে। কিছুদিন পরপরই দেখা যায় ইন্টারনেটের মাধ্যমে শপিং করে মানুষ প্রতারিত হচ্ছে।প্রতারক চক্ররা এভাবেই মানুষকে ঠকিয়ে চলছে ইন্টারনেটের মাধ্যমে। এমনই একটি মোবাইলে প্রেমের প্রতারণার ফাঁদে পড়ে বিষপানে আত্মহত্যা করল এক যুবক।ঘটনা বক্সনগর ভেলুয়ারচড় চৌকিদার চৌমুহনীএলাকায়।ঘটনার বিবরণে জানা যায়, প্রায় তিন বছর পূর্বে ভেলুয়ারচড় গ্রাম পঞ্চায়েতের( ৩) নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা রবিউল ইসলামের ছেলে বছর ১৯ এর জুয়েল হোসেনের সাথে আগরতলা খয়েরপুরস্থিত পঞ্চায়েত টিলা এলাকার বিল্লাল হোসেনের কন্যা ফারজানা আক্তার (মিম) নামে এক মেয়ের সঙ্গে মোবাইলে ফেসবুকের মাধ্যমে মেসেঞ্জারে কথা হয়।পরিচয় সহ আলাপচারিতায় দুজনের মধ্যে সম্পর্ক গভীর হয়ে ওঠে। ফারজানা জানায় গুহাটিতে সে পড়াশোনা করে। দুজনের মধ্যে ফোন নাম্বার বিনিময় হয়।তারপর থেকেই শুরু হয় প্রেম পর্ব।দুজনের মধ্যে বিবাহ হওয়ার চুক্তি হয়।সহজ সরল গ্রাম্য ছেলে জুয়েল মোবাইলে ফারজানার সমস্ত কথাবার্তা বিশ্বাস করে আবেগ প্রবণ হয়ে মন থেকে ভালোবেসে ফেলে।তিন বছরের মধ্যেই দুই রোমিও প্রেমিক প্রেমিকার মধ্যে সরাসরি কোন দেখা হয়নি। মোবাইল ইন্টারনেটের মাধ্যমে চলছে দুজনের মধ্যে মধুর প্রেম। এই প্রেমে হাবুডুবু খেয়ে জুয়েল তিন বছরে প্রায় তিন লক্ষাধিক টাকা ফারজানার একাউন্টে প্রেরণ করেন।তাদের মধ্যে একটাই কথা বিবাহ অবশ্যই হবে।জুয়েলের মধ্যে দুজনের মধ্যে বিবাহর বিশ্বাস থাকলেও প্রতারক ফারজানার মনে কিন্তু অর্থের লোভ ছাড়া কিছুই ছিল না।তবে জুয়েলের বাবার সঙ্গে কথা বললে জানা যায়,জুয়েলের প্রেমিকা ফারজানা খয়েরপুরস্থিত পঞ্চায়েত টিলা এলাকায় তার ঠিকানা বললেও এখনও তারা জানতে পারেনি ঠিকানাটা সঠিক ছিল কিনা। অনেক সময় গৌহাটি বাড়ি আছে বলেও বলতেন ফারজানা।গত ১৩ই জানুয়ারি ফারজানার পরিবারের সঙ্গে কথা হয় বিবাহের দিন তারিখ নির্ধারণ করার জন্য। কিন্তু ফারজানার পরিবার বিবাহ সম্পর্কে সুস্পষ্ট কোনো কথা বলেনি।১৫ই জানুয়ারি ভোর বেলা জুয়েল ফারজানার সঙ্গে বিবাহ নিয়ে বহু কথা কাটাকাটি হয়।শেষ পর্যন্ত জুয়েলকে তার প্রেমিকা ফারজানা আক্তার বিবাহে অসম্মত প্রকাশ করে। ফারজানা জুয়েলকে ফোনে জানায় সে তাকে বিয়ে করবে না,তবে সে এই পৃথিবীতে ও থাকবে না | প্রেমিকা ফারজানার এই অভিনয়ের প্রেমের ফাঁদে পড়ে শেষ পর্যন্ত রবিবার সকালে মরণব্যাধি কীটনাশক (হিলডন) বাড়ির লোকজনের অনুপস্থিতিতে একাকিত্বের সুযোগ নিয়ে নিজ বাড়িতে খেয়ে ফেলেন। এদিকে কীটনাশকের গন্ধ ছড়িয়ে পড়তেই বাড়ির লোকজন তড়িঘড়ি জুয়েলকে প্রথমে বক্সনগর সামাজিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যায়।বক্সনগর সামাজিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা সেরে কর্তব্যরত চিকিৎসক জুয়েলকে জিবি হাসপাতালে রেফার করেন।জিবি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসক চিকিৎসা শুরু করার সাথে সাথেই জীবন যুদ্ধে হেরে যান জুয়েল।চিরতরে চলে যান না ফেরার দেশে।মোবাইলে প্রেমের ফাঁদে পড়ে তরতাজা যুবক জুয়েলের আকস্মিক মৃত্যুতে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তার মা-বাবা সহ সকল আত্মীয়-স্বজন। এলাকার অভিভাবক থেকে শুরু করে বুদ্ধিজীবী মহল তার মৃত্যুর প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বলেন, মিথ্যা প্রতারণার ফাঁদে পড়ে জুয়েলের মত আর কোন মায়ের কোল যেন খালি না হয়।ইন্টারনেটের মাধ্যমে বহু প্রতারক চক্র আজ অর্থ কামাইয়ের ধান্দায় মেয়ে বা মহিলাদের দিয়ে এভাবে প্রতারণা করে চলছে।এই ধরনের প্রতারণায় যেন কেউ ফাঁদে না পড়ে বিশেষ ভাবে অনুরোধ করেন এলাকার বুদ্ধিজীবী মহল।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Previous post বাম সমর্থিত কৃষকের জমি নষ্ট করলো দুষ্কৃতীরা।
Next post ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে কম্বল বিতরণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী
%d bloggers like this: