কৈলাসহর পুর পরিসদের ১৫নং ওয়ার্ডের সোনামাড়া এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা অরুণ মালাকারের সাথে এলাকাবাসীর সুসম্পর্ক রয়েছে। স্থানীয় কাউন্সিলর উনার সাধ্যমতো কয়েক বার অরুণ বাবুকে সাহায্য সহযোগিতা করার চেস্টাও করেছিলেন। অরুণ বাবুর পত্নী বিয়োগের পর নিজেকে বড় একা অনুভব করেন অরুন বাবু। হ্যাঁ ঠিক এমনটাই জানিয়েছেন এই অশীতিপর বৃদ্ধ অরুন বাবু। পত্নী বিয়োগের কথা বলতে বলতে হঠাৎ চোখের কোনের জলটা যেন চরম দারিদ্রতার মধ্যেও বার বার তাদের ভালোবাসার রঙিন দিন গুলোর কথা মনে করিয়ে দিচ্ছিলো। বর্তমানে বাড়িতে বাবা আর ছেলে দুজন মিলেই তাদের সংসার। ছেলে অমিতের বয়স আনুমানিক ৩০ কিংবা ৩২ হবে,অমিত চোখে দেখতে পায়না। তবে নিজ ইচ্ছা শক্তির জোরে বাড়ির টুকিটাকি কাজ সে নিজেই করে। অমিতের অন্ধত্বের বিষয়ে যখন আমরা জানার চেষ্টা করি তখন সে জানায়, এই অন্ধত্ব বা চোখে না দেখাটা তার জন্মগত নয়। অমিত জানায় ওর যখন বয়স ৬ বৎসর হবে অর্থাৎ আজ থেকে প্রায় ২৪ থেকে ২৫ বৎসর পূর্বে যখন বিদ্যুৎ পরিসেবা ঠিক ভাবে পৌঁছয়নি গ্রাম থেকে শহরের অলি গলিতে তখন হ্যারিকেন কিংবা কুপি বাতির উপর ভরসা করেই ঘর আলোকিত করে রাখতে হত,যা হয়ত এই প্রজন্মের অনেকেই জানেন না। ঐ সময় অমিত পড়াশোনা করার সময় একদিন সন্ধ্যাে বেলা কুপি বাতির সংস্পর্শে আসলে তার চোখ ক্ষতিগ্রস্থ হয়। প্রথম প্রথম কিছুটা দেখতে পেলেও পরবর্তী সময়ে অর্থের অভাবে উন্নত চিকিৎসা না করতে পারায় সে সম্পূর্ণ অন্ধ হয়ে যায়। তবে সম্পূর্ণ অন্ধ হওয়ার পূর্বে অমিতের বাবার ইচ্ছেতে সে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। বিয়ের কয়েকবছর যাবার পর এক পুত্র সন্তান ও এক কন্যা সন্তানের জন্ম হয় অমিতের। তবে ধীরে ধীরে অমিতের প্রতিবন্ধকতা বাড়তে বাড়তে সে যখন পুরো অন্ধ হয়ে যায় অমিতের স্ত্রী তার সঙ্গ ছেড়ে বাপের বাড়ি চলে যান। যে আশা নিয়ে ছেলেকে বিয়ে করিয়ে ছিলেন অরুন বাবু সেই আশা আকাঙ্ক্ষা গুলো যেন মুহূর্তের মধ্যে চুরমার হয়ে যায়। বর্তমানে অরুন বাবু সরকারী অনুদান হিসেবে বৃদ্ধ ভাতা আর ছেলে অমিত অন্ধত্বের জন্য অন্ধত্ব ভাতা পাচ্ছেন ঠিকই কিন্তু বয়সের ভারের কারনে আজ কাল ঠিকঠাক ভাবে শ্রম দিতে না পারলেও নিজের ও ছেলের রান্না এবং বাড়ির অধিকাংশ কাজ নিজেই করেন। বর্তমানে তাদের সংসার চালানোর একমাত্র পথ সরকারী অনুদান। তবে আজকের যুগে সরকারী অনুদানের চার হাজার টাকা দিয়ে সংসার চালানো তাদের পক্ষে খুব কঠিন হয়ে দাড়িয়েছে। ছেলের চিকিৎসা করিয়ে যদি সে আবার দেখতে পায় সেই আসাতেই অরুন বাবু পথ চেয়ে বসে আছেন তবে, ইচ্ছে থাকলেও উপায় নেই। সরকারী ভাতার টাকায় সংসার চালাতেই হিমশীম খাচ্ছেন অরুন বাবু। তাই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ছোট্ট একটি আবদার যদি ছেলের চোখের চিকিৎসার জন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী একটু হাত বাড়িয়ে দেন তবে হয়ত ভবিষ্যতে ছেলে আবার দেখতে পাবে এই সুন্দর ও সবুজ পৃথিবী

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Previous post বালেশ্বর ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃতদেহ শনাক্তকরণে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্য নিচ্ছে ভারতীয় রেলওয়ে
Next post যাত্রীবাহী গাড়ী উল্টে স্কুলপড়ুয়া ছাত্রী সহ আহত একাধিক!
%d bloggers like this: