করোনা কালো কোটি কোটি মানুষ টিকা নিয়েছিলেন। সেই নিয়ে নানাবিধ আতঙ্ক ছিল আগে থেকেই। এতদিন পর তাতে সিলমোহর দিল কোভিড-১৯ টিকা আবিষ্কারক ব্রিটেনের সংস্থা AstraZeneca. অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের সঙ্গে মিলে ওই টিকা তৈরি করে তারা। টিকা উৎপাদন করে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট, যা ভারতের বাজারে Covishield নামে বিক্রিত হয়। নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে সিরাম ইনস্টিটিউট কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন BJP-কে মোটা টাকা অনুদান দিয়েছিল বলে সামনে আসে। তাই AstraZeneca-র তরফে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার বিষয়টি মেনে নেওয়ার পর রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। করোনা টিকার কৃতিত্ব দাবি করতে কেন্দ্র এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পিছপা না হলেও, এখন কেন নিশ্চুপ, প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা। (Covishield Dose)AstraZeneca-র তৈরি করোনা টিকা নেওয়ার পর গুরুতর অসুস্থতা থেকে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটেছে বলে ৫১-টিরও বেশি মামলা জমা পড়েছে। ব্রিটেনের আদালতে বিষয়টি মেনে নিয়েছে AstraZeneca-ও। ওই টিকা থেকে কিছু ক্ষেত্রে রক্ত জমাট বাঁধার মতো বিরল রোগ শরীরে বাসা বাঁধতে পারে বলে জানিয়েছে তারা। বিষয়টি সামনে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে গোটা বিশ্বে এবং এ দেশের রাজনীতিতেও। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে কংগ্রেস, আম আদমি পার্টির মতো দল। (Covishield Side Effect)

কংগ্রেস নেতা শ্রীনিবাস বিভি ট্যুইটারে লেখেন, ‘ব্রিটেনের আদালতে Covishield টিকা উৎপাদবকারী সংস্থা মেনেছে যে তাদের তৈরি টিকা থেকে বিরল TTS রোগ হতে পারে, যাতে রক্ত জমে হার্ট অ্যাটাক এবং ব্রেন হ্যামরেজের ঝুঁকি বাড়ে। এখন Thank You Modi Ji ব্যানার কোথায় গেল? প্রধানমন্ত্রী এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রক নিশ্চুপ কেন? অল্প বয়সে হার্ট অ্যাটাক এবং ব্রেন হ্যামরেজে মৃত্যু কী কারণে হল? BJP, Serum Institute-এর থেকে ৫০ কোটির নির্বাচনী বন্ড কি এই কারণেই নিয়েছিল? রাজনীতি নয়, মানুষের জীবনের প্রশ্ন জড়িয়ে এর সঙ্গে।নির্লজ্জ ভাবে টিকার কৃতিত্ব দাবি করা প্রধানমন্ত্রীকে জবাব দিতেই হবে। কারণ ভারতের অর্ধেক জনসংখ্যাই AstraZeneca-র Covieshield টিকা নিয়েছিল’।

আম আদমি পার্টির নেতা তথা দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সৌরভ ভরদ্বাজও এ নিয়ে কেন্দ্রের জবাব দাবি করেছেন। সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সৌরভ বলেন, “দেশের কোটি কোটি মানুষ Covieshield টিকা নিয়েছেন, তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে অবিলম্বে বিবৃতি দেওয়া উচিত কেন্দ্রের। সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন বহু ভিডিও দেখেছি, যেখানে কাজ করতে করতে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে মানুষের। অতিমারির আগে এসব ছিল না। এর সঙ্গে কোভিড টিকার সংযোগ উঠে এসেছে একাধিক বার, যা অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়। যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে বেশিরভাগই অল্পবয়সি। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ক্ষেত্রে কী করণীয়, সেই নিয়ে সরকারের কাজে হাত দেওয়া উচিত”।

এ নিয়ে কেন্দ্রের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি এখনও পর্যন্ত, তবে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ ছড়িয়েছে সর্বত্র। এর আগেও, করোনা প্রতিরোধী টিকার কার্যকারিতা এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে একাধিক দাবিদাওয়া সামনে এসেছে। Covieshield টিকা বিক্রির পর যেভাবে রাতারাতি আদর পুণাওয়ালার সম্পত্তি ফুলেফেঁপে উঠেছে সেই নিয়েও প্রশ্ন এসেছে। নির্বাচনী বন্ড মারফত আদরের সংস্থা BJP-কে মোটা টাকা অনুদান দেয় বলেও সামনে আসে। Association for Democratic Reforms জানায়, BJP-কে ৫০ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দেয় Serum Institute. সেই নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধীরা। ভারতে ১৬০ কোটির বেশি Coviesheild ডোজ মানুষকে দেওয়া হয়েছে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Previous post মাটির ট্রিপার চলাচলের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নতুন রাস্তা- ক্ষুব্দ এলাকাবাসী
Next post ঊষাবাজারের দূর্গাপ্রসন্ন হত্যাকান্ডে পুলিশের জালে এক মহীলা! ঘটনায় নয়া মোড়?
%d bloggers like this: