আঠারোমুড়ার ঘন বনাঞ্চল ন্যাড়া মাথার মতো রূপ নিচ্ছে, খোয়াই নদী তার নাব্যতা হারাচ্ছে এবং পাহাড় বৃষ্টির জল ধরে রাখতে পারছে না। ফলে একদার খরস্রোতা খোয়াই নদীতে বালির চর পড়ছে। আর সেই বালির চরে তৃণভূমি গজিয়ে উঠছে। নদী তার গতিপথ পাল্টে যাচ্ছে। সবকিছু মিলিয়ে আগামী দিনের জন্য এক অশনি সংকেতের পদধ্বনি ঘনীভূত হয়ে আসছে। ঘটনা খোয়াই নদীর উৎস স্থল আঠারোমুড়া পাহাড়। এই আঠারোমুড়া পাহাড় পূর্বে ঘন বনাঞ্চল ছিল, আর ছিল সেই বনাঞ্চলে গুল্ম জাতীয় লতানু উদ্ভিদ। কিন্তু সভ্যতা বিকাশের সাথে সাথে আঠারোমুড়ার ঘন বনাঞ্চল বনদস্যুর একাংশ বন কর্মীদের বগল দাবা করে ঘন বনাঞ্চল ন্যাড়া মাথার আকার ধারণ করছে। অন্যদিকে খোয়াই নদীর উৎস স্থল বনদপ্তর সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারছে না। এছাড়াও বিজ্ঞান যুগের সাথে তাল মিলিয়ে মানুষজন প্রয়োজনে এবং অপ্রয়োজনে বনাঞ্চলের মূল্যবান বৃক্ষ ছেদন করে বসতি তৈরি করছে। যা বনদপ্তরের অজানার কথা না সবকিছু জেনেশুনেও খোয়াই জেলা বনদপ্তর আঠারোমুড়া পাহাড়ে নতুন করে বনশ্রী জন করছে না বলে একাংশ মহলের অভিযোগ। ফলে একদা খরস্রোতা খোয়াই নদী তার ন্যাব্যতা হারিয়ে নদী গর্ভে রাশি রাশি বালির চর। আর এর সাথে সেই বালির চরে তৃণজাতীয় উদ্ভিদ গজিয়ে উঠছে ক্রমান্বয়ের সাথে পাল্লা দিয়ে। ওইসব কারণে নদী তার গতিপথ আংশিক ভাবে পরিবর্তন হয়েছে। ফলে বর্ষাকালে নদীর দুই কুল ছাপিয়ে জলশ্রুতে কৃষি জমি থেকে শুরু করে বসতবাড়ি পর্যন্ত নদীগর্ভে তলিয়ে যায়। বসন্ত কালে খোয়াই নদীর এমন শুষ্কতা অশনি সংকেতের মত। কারণ এই খোয়াই নদী জলের উপর নির্ভর করতে হয় তেলিয়ামুড়া পৌর পরিষদের ১৫ টি ওয়ার্ডের মানুষজনরা। এই নদীর উপর নির্ভর করেই তেলিয়ামুড়া শহরের লাগোয়া স্থানে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট তৈরি করা হয়েছিল। খোয়াই নদী শুষ্কতার কারনে বসন্তকাল এবং গ্রীষ্মকাল এই দুইটি ঋতুতে তেলিয়ামুড়া পৌর এলাকার মানুষজনরা প্রচন্ড জল সমস্যা ভোগ করতে হয়। তবে এলাকার শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মহলের ধারণা বনদপ্তর যদি খোয়াই নদীর উৎস স্থল সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করে এবং আঠারোমুড়া পাহাড়ে নতুন করে বনসৃজন করে তাহলে খোয়াই নদী ফের ভরা যৌবনের পরিপূর্ণ খরস্রোতা হয়ে উঠতে পারে। এতে তেলিয়ামুড়া শহরের মানুষজনের জল সংকট অনেকটাই লাঘব হতে পারে।