জল নিষ্কাশন না হওয়ার ফলে প্রায় দুই শত কানি কৃষি যোগ্য জমি প্রায় ছয় মাস ধরে জলে প্লাবিত হয়ে রয়েছে। তাছাড়া, গ্রামে প্রায় দেড় বছর ধরে পানীয়জলের সমস্যা রয়েছে। গ্রামবাসীরা দফায় দফায় সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আধিকারিকদের লিখিত ভাবে এবং মৌখিক ভাবে জানানোর পরও দপ্তরের আধিকারিকদের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের কার্যকরী ভুমিকা নেওয়া হয়নি। এরই প্রতিবাদে গ্রামবাসীরা রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে। ঘটনা কৈলাসহরের নূরপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। উল্লেখ্য, কৈলাসহরের গৌরনগর ব্লকের অধীনস্থ নূরপুর গ্রাম পঞ্চায়েত। অবরোধকারী গ্রামবাসীরা জানান যে, নূরপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার প্রায় দুই শত কানি কৃষি যোগ্য জমি প্রায় ছয় মাস ধরে জলের নীচে রয়েছে। পাশ্ববর্তী ইছবপুর এবং কনকপুর গ্রামের জল ড্রেন দিয়ে চলে আসে নূরপুর গ্রামের কৃষি যোগ্য জমিতে। নূরপুর গ্রামে ড্রেন না থাকার ফলে পাশ্ববর্তী গ্রামের জল ড্রেনের মাধ্যমে নূরপুর গ্রামের কৃষি যোগ্য জমিতে চলে আসায় গ্রামের গরু কিংবা মহিষদের লালন পালন করতে পারছে না গ্রামবাসীরা। এব্যাপারে গ্রামবাসীরা স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ সহ মহকুমাশাসককে কয়েকবার লিখিত ভাবে এবং মৌখিক ভাবে জানানোর পরও কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে গ্রামবাসীরা জানান। তাছাড়া, নূরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের দুই নং ওয়ার্ডের মহিমপুর গ্রামে প্রায় দেড় বছর ধরে পানীয়জলের হাহাকার চলছে। প্রায় দেড় বছর পূর্বে জল জীবন মিশন প্রকল্পে গ্রামে পাম্প মেশিন বসিয়ে প্রতিটি বাড়িতে জলের পাইপ ঢুকিয়ে দেওয়া হলেও আজ অব্দি পানীয়জল সরবরাহ করে দেওয়া হয়নি বলে গ্রামবাসীরা অভিযোগ করেন। দফায় দফায় সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আধিকারিকদের জানানোর পরও আজ অব্দি কোনো ধরনের কার্যকরী ভুমিকা গ্রহণ করেনি দপ্তর। প্রশাসনকে বার বার জান্র পর প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের পদক্ষেপ না নেওয়ার ফলে গ্রামবাসীরা উত্তেজিত হয়ে চব্বিশ ফেব্রুয়ারি সোমবার সকাল দশটা থেকে নূরপুর গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস সংলগ্ন কনকপুর-শ্রীনাথপুর যাবার রাস্তাটি অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন শুরু করে। রীতিমতো রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে বাঁশের ব্যারিকেড বানিয়ে অবরোধ করে গ্রামবাসীরা। রাস্তা অবরোধের খবর পেয়ে কৈলাসহর থানার পুলিশ অবরোধস্থলে চলে যায়। অবরোধের ফলে পথচারী সহ নিত্য যাত্রীরা নাজেহালের শিকার হয়েছেন। তাছাড়াও, অবরোধের ফলে রাস্তার দুপাশে প্রচুর গাড়িও আটকে যায়। অবরোধের খবর পেয়ে দুপুর সোয়া বারোটা নাগাদ কৈলাসহরের পানীয়জল ও স্বাস্থ্য বিধান দপ্তরের আধিকারিক নির্মল চন্দ্র বিশ্বাস অবরোধস্থলে এসে অবরোধকারীদের সাথে দীর্ঘক্ষন আলাপ আলোচনা করে জানান যে, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে গ্রামের পাম্প মেশিন চালু করে প্রতিটি বাড়িতে পানীয়জল সরবরাহ শুরু করা হবে এবং কৃষি যোগ্য জমিতে জমা জল নিষ্কাশনের জন্য স্থানীয় পূর্ত দপ্তরের সাথে আলোচনা করে গ্রামে ড্রেন নির্মান করার জন্য ব্যবস্থা করবেন। নির্মল চন্দ্র বিশ্বাসের কাছ থেকে এই আশ্বাস পাবার পর অবরোধকারী গ্রামবাসীরা দুপুর একটা নাগাদ অবরোধ প্রত্যাহার করে নেন। এখন দেখার বিষয় সংশ্লিষ্ট দপ্তরের পক্ষ থেকে আদৌ কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয় কিনা।
#tripura #news #protest